নিজস্ব প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) মুক্তি পেয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন কানু মিয়া, যিনি বিচারবিহীনভাবে গত ৩০ বছর ২ মাস ১৯ দিন কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৯৯৫ সালের ২৫ মে ঘুমন্ত মাকে কোদাল দিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এই ব্যক্তির মামলার কোনো বিচার হয়নি, তবুও তাকে আটক রাখা হয়েছিল।
লিগ্যাল এইডের আইনজীবী এম এ মজিদের উদ্যোগে সোমবার (১৪ জুলাই) হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম কানু মিয়াকে জামিন মঞ্জুর করেন। লিগ্যাল এইড অফিসার মুহাম্মাদ আব্বাছ উদ্দিনের তদারকিতে কানু মিয়ার ভাই মনু মিয়া ও নাসু মিয়ার সহায়তায় এই মুক্তি সম্ভব হয়েছে।
আইনজীবী এম এ মজিদ বলেন, “এটি একটি অমানবিক ঘটনা। কোনো বিচার ছাড়াই একজন মানসিক রোগীকে তিন দশকের বেশি সময় কারাগারে রাখা হয়েছে।” আদালত সূত্রে জানা যায়, কানু মিয়ার মানসিক অবস্থার কারণে মামলার বিচারিক কার্যক্রম আগেই স্থগিত ছিল।
মুক্তির পর কানু মিয়াকে কারাগার গেটে গ্রহণ করেন তার দুই ভাই। দীর্ঘদিন পর ভাইদের মুখ দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রা জানান, কানু মিয়ার পরিবার তাকে ভুলেই গিয়েছিল, অনেকেই মনে করতেন তিনি মারা গেছেন।
এই ঘটনায় হবিগঞ্জের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল হাই বলেন, “একজন মানসিক রোগীর জামিনের ব্যবস্থা করা একটি মহৎ উদ্যোগ ছিল।” এখন কানু মিয়াকে পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে রাখা হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।