নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেছেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে তার ছেলের নৃশংস হত্যার ছয় বছর পরও পূর্ণ বিচার হয়নি। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে তিনি এ মর্মান্তিক বক্তব্য দেন।
বরকত উল্লাহ বলেন, “২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আমার ছেলেকে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার অপরাধ ছিল শুধু এই যে, সে দেশের স্বার্থে সোচ্চার হয়েছিল।” তিনি জানান, আবরার ফাহাদ ভারতের আধিপত্যবাদী নীতি ও তৎকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের কয়েকটি বিতর্কিত চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে অবস্থান নিয়েছিল।
আবরারের বাবা বলেন, “আমার ছেলে লিখেছিল, ভারত গোপনে ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার করছে, আমাদের ইলিশ মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে, অথচ সেগুলোই কম দামে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। এই সত্য কথা বলার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়েছে। সে সময় খুনি হাসিনা সরকার একপাক্ষিকভাবে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করেছিল।”
ছয় বছর ধরে বিচারের অপেক্ষায় থাকা বাবা বলেন, “আজও আমার ছেলের হত্যার ন্যায়বিচার পাইনি। আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই – এটাই একজন শোকাহত বাবার আকুতি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও র্যাগিং চলছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে, তাহলে কেন এসব বন্ধ হচ্ছে না?”
বরকত উল্লাহ আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের তালিকা অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করেছে। কিন্তু ছাত্রলীগের র্যাগিংয়ে নিহতদের কোনো রাষ্ট্রীয় তালিকা নেই। আমি দাবি করছি, এসব মৃত্যুরও একটি সরকারি তালিকা তৈরি হোক।”
তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে দেশকে ভালোবেসেছিল, এটাই ছিল তার অপরাধ। বারবার বিচার চেয়েও আমি এখনো অসমাপ্ত প্রক্রিয়া দেখছি। দেশের বিবেকবান মানুষদের কাছে আমার অনুরোধ – আবরারের জন্য প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন।”