নিজস্ব প্রতিনিধি:
জনকণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাদের বকেয়া ৬ কোটিরও বেশি টাকা আদায়ের দাবিতে রোববার কর্মবিরতি পালন করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মবিরতির পর তারা পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বকেয়া পরিশোধের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
জনকণ্ঠের নতুন সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য সাবরিনা বিনতে আহমদ কর্মবিরতি শেষে এক বিবৃতিতে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিক ও কর্মীদের রক্তচুষে চলেছে। এই টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।” তিনি জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে পত্রিকাটি কালো টেমপ্লেট প্রকাশের জন্য মালিকপক্ষের সমালোচনা করে বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই কাজ করা হয়েছে। এর জন্য দায়ীদের শাস্তি পেতে হবে।”
সাবরিনা আরও দাবি জানান, জুলাই বিপ্লবের পক্ষে অবস্থান নিয়ে লাল রঙের টেমপ্লেট ব্যবহারের কারণে যেসব সাংবাদিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে সম্মানের সঙ্গে পুনর্বহাল করতে হবে। এছাড়া মালিকপক্ষের “ফ্যাসিবাদী মনোভাবের” প্রতিবাদে আগামী দুই দিন প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশনা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, “এই প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত তিন শতাধিক ব্যক্তির পাওনা টাকা দিতে হবে। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কর্পোরেট মানবতাবিরোধী এই আচরণ বন্ধ করতে হবে।”
জনকণ্ঠের প্ল্যানিং এডভাইজার ও সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন শিশির মালিকপক্ষের স্বৈরাচারী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, “হাসিনা সরকারের আদলে ২০ জন সাংবাদিককে অন্যায়ভাবে নোটিশ দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “জনকণ্ঠের বিভিন্ন তথ্য গ্রুপ সাতটি বিদেশি নম্বর থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, যারা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’এর এজেন্ট। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এরফানুল হক নাহিদ বলেন, “নোটিশ ছাড়া কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যায় না। জনকণ্ঠকে এই অন্যায়ের জবাব দিতে হবে।” তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “গণমাধ্যম পরিচালনা কয়েলের ব্যবসার মতো নয়। ইচ্ছেমতো সাংবাদিকদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না।”
এই কর্মবিরতিতে পত্রিকাটির প্রধান প্রতিবেদক কাওছার রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি উত্তম চক্রবর্তী, ডেপুটি চীফ রিপোর্টার ইসরাফিল ফরাজীসহ শতাধিক সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সবাই আল্টিমেটামের প্রতি তাদের সমর্থন জানান।