আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক এক ঘোষণার সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখ বন্ধ অবস্থার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিগুলো দেখে অনেকের ধারণা, ট্রাম্প হয়তো অনুষ্ঠানের মাঝেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার কার্যদক্ষতা ও মানসিক সতর্কতা নিয়ে সমালোচকদের মধ্যে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
ওষুধের দাম কমানোর ঘোষণা, কিন্তু নজর অন্যখানে
গত বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় ওজন কমানোর ওষুধগুলোর দাম কমানোর ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে দেখা যায়, তার চোখ বারবার বন্ধ হয়ে আসছে, কখনো চোখ কচলাচ্ছেন, আবার কখনো চোখ খোলা রাখতে কষ্ট হচ্ছে। ঠিক এই মুহূর্তগুলোরই ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হোয়াইট হাউসের ব্যাখ্যা: ‘ঘুম নয়, মনোযোগ’
ছবিগুলো ভাইরাল হওয়ার পরপরই সমালোচনায় মুখর হন ট্রাম্পবিরোধীরা। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র টেইলর রজার্স সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘুমাচ্ছিলেন না; বরং তিনি পুরো সময় বক্তব্য দিয়েছেন এবং সাংবাদিকদের বহু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।”
রজার্স আরও যোগ করেন, “অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট দুটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের দাম কমানোর ঘোষণা দেন, যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা ও অন্যান্য জটিলতায় ভোগা নাগরিকদের সহায়তা করবে। এতে কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হবে এবং অসংখ্য মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। কিন্তু ব্যর্থ উদারপন্থী সংবাদমাধ্যম এই ইতিবাচক খবর না ছড়িয়ে উল্টো বিভ্রান্তিকর গল্প ছড়াচ্ছে।”
বয়স, স্বাস্থ্য ও সমালোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প। শুরু থেকেই তার স্বাস্থ্য নিয়ে সমালোচকরা নানা প্রশ্ন তুলেছেন। গত মাসে তিনি ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে একটি এমআরআই করান, তবে কেন করিয়েছেন তা স্পষ্ট করেননি।
হোয়াইট হাউস গত গ্রীষ্মে জানিয়েছিল, চিকিৎসকেরা প্রেসিডেন্টের পায়ের ফোলা পরীক্ষা করে শিরাজনিত একটি শারীরিক সমস্যা শনাক্ত করেছেন।
তবুও, ট্রাম্প নিজেকে “পুরোপুরি সুস্থ” বলে দাবি করেছেন এবং নিয়মিতভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
কর্মব্যস্ত সূচির মধ্যেও সক্রিয় ট্রাম্প
ভাইরাল হওয়া ছবির আগের দিনই ট্রাম্প মায়ামিতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অর্থনীতি নিয়ে ভাষণ দেন। এর ঠিক আগে তিনি এশিয়ার তিন দেশ সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন।
তার ঘন ঘন সফর ও ব্যস্ত সময়সূচির কারণেই হয়তো ওই অনুষ্ঠানে তিনি কিছুটা ক্লান্ত ছিলেন বলে ধারণা করছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল।