ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, চলমান ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার মধ্যেই এই রায় কার্যকর করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) তেহরান টাইমস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ইরানের সর্বোচ্চ আদালত তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে। যদিও তার নাম প্রকাশ করা হয়নি, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে তিনি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত ছিলেন।
এছাড়া একই দিনে ইরান আরও চারজন সন্দেহভাজন মোসাদ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র পুলিশের মুখপাত্র সাঈদ মনতাজের আল-মাহদী জানান, রাজধানী তেহরানের রে কাউন্টির ফাশাফুয়েহ জেলায় দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক, ড্রোনের যন্ত্রাংশ, লঞ্চার এবং একটি নিসান পিকআপ জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “এই গ্রুপটি অন্তর্ঘাতমূলক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা এর আগেই চিহ্নিত হয়ে যায় এবং সময়মতো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।”
একই দিনে রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠ আলবোর্জ প্রদেশের সাভোজবোলাঘ কাউন্টি থেকেও আরও দুই সন্দেহভাজন মোসাদ এজেন্টকে আটক করা হয়। ইরানি গোয়েন্দাদের দাবি, এরা সবাই একটি বৃহৎ ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল, যার মাধ্যমে ড্রোন ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করা হচ্ছিল।
ইরান অভিযোগ করেছে, ১৩ জুন ইসরাইল তাদের অভ্যন্তরে একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় এবং আবাসিক ভবনে বিমান হামলা চালায়। এই আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ইরান তেল আবিব, জেরুজালেম, হাইফাসহ ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
এই পাল্টা আক্রমণের ফলে ইসরাইলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং বহু বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
ইরানি সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে মোসাদ সংশ্লিষ্ট সব নেটওয়ার্ক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। সর্বশেষ গ্রেফতারগুলো ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা ও সফলতা প্রদর্শন করে বলেও দাবি করা হয়।