আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান। তিন দেশ একসঙ্গে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে, যেখানে অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে হামলা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই প্রস্তাব আসে এমন এক সময়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়েছে। এটি ১৯৭৯ সালের পর ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা এক বিপজ্জনক মোড় সৃষ্টি করেছে।” তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং গঠনমূলক ও ধারাবাহিক কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ইরানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তিকে ‘অস্ত্র’ বানিয়ে আক্রমণের অজুহাত তৈরি করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, এনপিটি চুক্তিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
উল্টো, ইসরাইলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন মার্কিন হামলাকে “চূড়ান্ত আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “ইরান গোপনে ক্ষেপণাস্ত্র ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছিল।”
পাকিস্তানের জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার বলেন, “একতরফা সামরিক হস্তক্ষেপ কখনো সমাধান আনেনি—এটি বরং পুরো অঞ্চলকে সংকটময় করে তোলে।” তিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে জোর দিয়ে বলেন, “এটি গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য এখন প্রয়োজন।”
চীনের প্রতিনিধি ফু কং বলেন, “বলপ্রয়োগে শান্তি আসবে না।” তিনি মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ এখনও খোলা রয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করে বলেন, “ইরাকের গণবিধ্বংসী অস্ত্রের মিথ্যার মতোই এবারও মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”
তিন দেশের উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবে সব পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনে আহ্বান, বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং ইরানের পরমাণু ইস্যুতে গ্রহণযোগ্য কূটনৈতিক সমাধান খোঁজার সুপারিশ করা হয়েছে।