নিজস্ব প্রতিনিধি:
মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৩৩ জনের মৃত্যু ও ১৫০ জনের বেশি আহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) একটি তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত ‘জননিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায়’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ জোন থেকে স্কুল-কলেজসহ জনসমাগমস্থল সরিয়ে নেওয়ার জোরালো সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মাইলস্টোন স্কুল বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার (বিমান উড্ডয়ন-অবতরণ অঞ্চল) মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় এটি কারিগরিভাবে বৈধ হলেও কার্যত মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। বিআইপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম ব্যাখ্যা করেন, “আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিমানবন্দরের রানওয়ের পর ৫০০ ফুট পর্যন্ত কোনো স্থাপনা না থাকলেও পরবর্তী ৪ কিলোমিটার অঞ্চলে উচ্চতা নিয়ন্ত্রণে শিথিলতা রয়েছে। রাজউকের ড্যাপে ভূমি ব্যবহারের স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় এ ধরনের বিপজ্জনক স্থাপনা গড়ে উঠেছে।”
বিআইপি সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান জরুরি ভিত্তিতে তিনটি সুপারিশ পেশ করেন:
১. অ্যাপ্রোচ জোন থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা ও জনসমাগমস্থল অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া
২. বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় পাখি আকর্ষণ করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা
৩. জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা
প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, রাজধানীর অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে বিমানবন্দরটি এখন সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকায় বেষ্টিত। আদিল মুহাম্মদ খান সতর্ক করে বলেন, “বর্তমান নিয়মে অ্যাপ্রোচ এলাকায় ১৫০ ফুট উচ্চতার স্থাপনা অনুমোদিত হলেও তা জননিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে অগ্রহণযোগ্য। যেসব স্থাপনা উচ্চতা সীমা অতিক্রম করেছে, সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে।”
বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে দেশব্যাপী বিমানবন্দর সংলগ্ন অনিরাপদ স্থাপনা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু মাইলস্টোন নয়, বিমানবন্দরের আশেপাশে অবস্থিত আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা একই রকম ঝুঁকিতে রয়েছে। বিআইপির এই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স ডকুমেন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।