নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা বাড়াতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আটটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে। মার্কিন সরকারের ফিসক্যাল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট বা আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে এই পরামর্শগুলি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মূলত আগের সরকারের তৈরি বাজেট কাঠামো অনুসরণ করছে। তবে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা বাড়াতে কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এবার দেখা যাক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা আনতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কী কী পরামর্শ দিয়েছে।
১. বছরের শেষ হিসাব প্রতিবেদন যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা।
২. বাজেট নথি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রস্তুত করা।
৩. নির্বাহী কার্যালয়ের ব্যয় আলাদাভাবে দেখানো।
৪. বাজেটে সরকারের রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ করা।
৫. আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বাজেটের পূর্ণাঙ্গ তথ্য যেন তারা পায়, সেই ব্যবস্থা করা।
৬. নিরীক্ষা প্রতিবেদন সময়মতো প্রকাশ করা, যেখানে প্রস্তাবনা ও বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
৭. প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ–সংক্রান্ত চুক্তির মূল তথ্য প্রকাশ করা।
৮. সরকারি ক্রয়ের তথ্য প্রকাশ করা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের সরকার নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও প্রণীত বাজেট অনলাইনে সাধারণ জনগণের জন্য প্রকাশ করলেও বছরের শেষ হিসাব প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা হয়নি। বাজেটের তথ্য সাধারণভাবে নির্ভরযোগ্য হলেও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী তা হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারের ঋণ ও দেনার পরিমাণ বাজেটে প্রকাশ করা হলেও, পরিকল্পিত ব্যয়, রাজস্ব আয় এবং প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে অর্জিত আয় সংক্রান্ত তথ্য অসম্পূর্ণ ছিল। বিশেষ করে নির্বাহী বিভাগের ব্যয়ের বিস্তারিত আলাদা করে দেখানো হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বরাদ্দ ও আয় প্রকাশিত হলেও রাজস্ব ও ব্যয়ের সম্পূর্ণ হিসাব পাওয়া যায়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর উল্লেখ করেছে, সরকারি নিরীক্ষক সংস্থা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পুরো হিসাব যাচাই করতে পারেনি। কিছু সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হলেও প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বতন্ত্র নয়।
প্রাকৃতিক সম্পদ খাতের চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানে আইনগত মানদণ্ড অনুসরণ করা হলেও সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সীমিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত করেছে এবং আগের সরকারের চলমান সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিগুলো স্থগিত করেছে।